সহকারী জজ।





বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন পরীক্ষার নিয়োগ।        
===============================

#প্রশ্ন ১ : জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় একজন ছাত্র কিভাবে  প্রস্তুতি নিলে পরীক্ষায় পাশ  হওয়ার ভালো সম্ভাবনা থাকে?

#উত্তর : জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায়    আইন বিষয়ে পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী এ পরীক্ষায় অংশ নেবেন এ কারণে আইন বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নের ওপর কম-বেশি সবারই একটা ভালো ধারণা থাকবে। কারণ, আইন বিষয়ে শিক্ষার্থীরা অনেকদিন ধরে পড়াশোনা করছেন বলেই আইনের অনেক খুঁটিনাটি বিষয় তাদের জানা থাকবে বলে আমি বিশ্বাস  করি। তবে আমি মনে করি মূল প্রতিযোগিতা হবে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান ও অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্নে। তাই, বেশী বেশী পড়তে হবে এসব বিষয়ে, ভালোভাবে ঝালাই করে নিতে হবে। প্রতিটি ভুল জবাবের জন্য ০.২৫ নম্বর করে কাটা হবে তাই প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সকল প্রশ্নের জবাব দেয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়, নিশ্চিত না হয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়া উচিত হবে না তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিজের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে আন্দাজ করে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়াটাও অন্যায়ের কিছু নয়। মনে রাখতে হবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার পরীক্ষা না এটা শুধু উত্তীর্ণ হওয়ার পরীক্ষা টিকে থাকার পরীক্ষা   ।

#প্রশ্ন ২  : জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের একজন শিক্ষার্থী বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান ও সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে কীভাবে প্রস্তুতি নেবে?

#উত্তর : বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান ও সাধারণ বিজ্ঞানে ভালো করতে হলে এসব বিষয়ের ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যবইগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
সাধারণ জ্ঞান ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীতে ভালো দক্ষতার জন্য নিয়মিত সংবাদপত্র পড়ার কোনো বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে, সমগ্র পৃথিবীর রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক বিষয়গুলো সম্বন্ধে ভালো করে ধারণা থাকতে হবে। বিশেষ করে ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞানে অন্তত ৯০ ভাগ নম্বর নিশ্চিত করতে এসব বিষয়ে বেশি সময় ধরে পড়াশোনা করতে হবে।

#প্রশ্ন ৩ : জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় আইন বিষয়ে ৫০ ভাগ প্রশ্ন করা হবে সেক্ষেত্রে আইন বিষয়ে ভালো করার জন্য আপনি পরীক্ষার্থীদের কি পরামর্শ দেবেন?

#উত্তর : সর্ব প্রথম আইন বিষয়ে ভালো করতে হলে বাংলাদেশের সংবিধানের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের সংবিধান এবং গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দেশের সংবিধান সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে।
পাশাপাশি, দেওয়ানি আইন ১৯০৮, ফৌজদারি আইন ১৯৯৮ ও পারিবারিক আইন সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে অর্থাৎ একজন আইনের ছাত্র হিসেবে আইনের প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে তার ভালো ধারণা থাকলেই প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব হবে।

#প্রশ্ন ৪ : লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে হলে একজন পরীক্ষার্থী কি কি করতে হবে? 

#উত্তর : লিখিত পরীক্ষা যেহেতু রচনামূলক হয়ে থাকে তাই একজন পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই ফ্রিহ্যান্ড রাইটিং মানে হাত খুলে লেখার অভ্যাস থাকতে হবে। পাশাপাশি, লেখায় সৃজনশীলতার পরিচয় দিতে হবে। বিশেষ করে বাংলা এবং ইংরেজি বিষয়ে যে রচনাগুলো থাকবে সেগুলো খুব মন দিয়ে ভালো করে গুছিয়ে লিখতে হবে ও অন্যান্য প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার সময়ও আগে প্রশ্ন মনোযোগ দিয়ে পড়ে নিতে হবে। পরে, ভালো করে বুঝে নিয়ে উত্তর করতে হবে আর সময়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরের জন্য আলাদা আলাদা করে সময়কে ভাগ করে নিতে হবে। যাতে করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব প্রশ্নের উত্তর দেয়া যায়, তবেই ভালো করা সম্ভব। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলোতে ভালো প্রস্তুতির চেয়ে আত্মবিশ্বাস বেশি কাজে দেয়, আমি সর্বোত্তম আমিই সেরা এ ধরনের আত্মবিশ্বাসী মনোভাব পরীক্ষায় ভালো করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

#প্রশ্ন ৫ : জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মৌখিক পরীক্ষায় কীভাবে নিজেকে সাবলীলভাবে উপস্থাপন করে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে উৎরে ওঠা যায়? 

#উত্তর : মৌখিক পরীক্ষায় ব্যক্তিগত ও আইনি প্রশ্নের বাইরে গিয়ে আরও অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে, এক্ষেত্রে প্রশ্নকর্তার প্রশ্ন মনোযোগ দিয়ে শোনাটাই প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
প্রশ্ন শোনার পর বুঝে-শুনে তার উত্তর দিতে হবে এবং আত্মবিশ্বাসী মনোভাব নিয়ে মৌখিক পরীক্ষায় প্রশ্নকর্তার মুখোমুখি হতে হবে। ভাইভা বোর্ডর আর্কষণ কাড়তে নিজেকে মার্জিত-শালীনভাবে উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে নিজের উত্তম রুচিশীলতার পরিচয় দিতে হবে।

#প্রশ্ন ৬ : একজন আবেদনকারীর একাডেমিক ফলাফল তার নিয়োগের ক্ষেত্রে কতটা প্রভাব ফেলবে বলে আপনি মনে করেন? 

#উত্তর : নিয়োগের ক্ষেত্রে একাডেমিক ফলাফল কোনো প্রভাব ফেলে বলে আমার মনে হয় না। এক্ষেত্রে নিয়োগ পরীক্ষায় কে কতটা ভালো করছে, কতটা ভালোভাবে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পেরেছে তার ওপর ভিত্তি করেই পরীক্ষার্থীকে মূলত নিয়োগ দেয়া হবে।


মো: আহাদ উল্যা শামীম
এডভোকেট, জজ কোর্ট, 
চট্টগ্রাম।   

Comments